Thursday, November 22, 2018

লাশ — ইসমাইল হোসেন

লাশ শব্দটা শুনতে কেমন যেন লাগে, যে মানুষটির কিছুক্ষন আগেও একটি নাম ছিলো, ছিলো একটি সামাজিক পরিচয় অথচ মৃত্যুর পরপরই তার নাম হয়ে গেলো লাশ। তখন আর কেউ তাকে তার নাম ধরে ডাকে না তারও কোনো আফসোস নেই এ নিয়ে। এতো প্রভাব এতো প্রতিপত্তি এতো নাম যশ যার ছিলো,ছিলো না কোন কিছুর অভাব! যে মানুষটা থাকতো সবসময় মানুষের সাথে মিলেমিশে।বাড়িতে আসলে ছেলেমেয়েরা "বাবা বাবা" বলে গলা জড়িয়ে ধরতো, প্রিয়তমা ডাকতো "ওগো" বলে,মা তো "খোকা" ছাড়া ডাকতোই না।কিন্তু সামান্য নিঃশ্বাষটা ভলে যাওয়ার পর লাশ ছাড়া কিছুই বলেনা। মানুষ টা যখন অফিসে যেতো,শুরু হয়ে যেতো সালাম দেওয়ার প্রতিযোগিতা,সবা
ই স্যার স্যার বলে পারতোনা জান দিয়ে দিতে।কতইনা বিলাসিতায় কাটছিল তার জীবন।কিন্তু মৃত্যুর পর সেই স্যারকেই আর কোনো মানুষ স্যার বলে বা নাম ধরে ডাকা বন্ধ করে, বলতে থাকেন লাশ! মূল্য দেয়না তার বিলাসিতার।
এটাই দুনিয়ার নিয়ম এটাই পৃথিবীর ধারা। মৃত্যু হলে তখন প্রিয় মানুষটিও আর মানুষ থাকে না সে তখন একটি লাশে পরিনত হয়ে যায়। হোক সে স্বামী স্ত্রী ছেলে কন্যা অথবা মা বাবা । এই নিষ্ঠুর পৃথিবী তখন সবাইকে লাশ বানিয়ে ফেলে । মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যে মানষুটির সাথে সংসার করেছেন এক সাথে জীবন কাটিয়েছেন সেও তখন লাশ বলা শুরু করেন। সে হোক রাজা-রানী,মন্ত্রী কিংবা প্রেসিডেন্ট তখন সকলের নাম একটি হয়ে যায় লাশ । তখন ধনী-গরীব ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকার কোনোই সুযোগ থাকে না। দুনিয়াতে প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা পরিচয়গুলো তখন বিলীন হয়ে যায় লাশ নামের আত্মার কাছে। দুনিয়াতে থাকাকালীন নামের আগে দেয়া টাইটেলগুলোও তখন রাখা যায় না। সকলেই লাশ নামের আত্মার কাছে নিজেদের পরিচয় নাম ডাক যশ সব কিছু এক করে হয়ে যায় একটি নাম। মৃত্যুর পর কেউ বলবে না রাজার গাড়ি আসতেছে সবাই বলবে লাশের গাড়ি! রানীকেও তখন কেউ বলবে না রানীর গাড়ি,রানীর গাড়িও লাশের গাড়িতে পরিনত হবে। এটাই তখন তার পরিচয় হয়ে যাবে। প্রত্যেকের দুনিয়ায় পাওয়া খ্যাতি নাম যশ বংশ পরিচয়গুলো ছেড়ে লাশ নামে পরিচিতি লাভ করবে ।
পৃথিবীর নাম্বার ওয়ান প্রভাবশালী মানুষটির নামটিও হবে লাশ । পৃথিবীর দেয়া নামগুলো তখন শুধু ভাসমান থাকবে সকলের মুখে মুখে । দুনিয়াতে সকলেরই একটি নাম থাকে যে নামে তাকে সকলে চিনে জানে বুঝে মানে। লাশ নামের কাছে দুনিয়ার দেয়া নামগুলো তখন সকলেই ক্ষনিকের জন্যে ভুলে যাবে। সকলেই ডাকতে থাকে লাশটাকে বাহির করো লাশটাকে গোসল দাও লাশের জানাজা পড়তে হবে লাশের কবর করতে হবে লাশের দাফন করা জরুরী । একজন মানুষের মৃত্যুর সাথে সাথেই তার নামটারও কিছু সময়ের জন্যে মৃত্যু হয়ে যায়,আর এভাবেই চিরচেনা প্রিয়জন প্রিয়সাথী প্রিয় মানুষগুলো আমাদের কাছে লাশ হয়ে যায়। তখন শত চেষ্টা করেও কারো মুখ থেকে লাশ ব্যতিত অন্য নাম বের করা কঠিন হয়ে যায়। শুধুমাত্র আমাদের কর্মগুলোই আজীবন বেঁচে থাকবে নাম হয়ে।যেমন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি কিংবা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার।আমাদের কারো যদি ময়নাতদন্ত হয়।তখন কেউ বলবে না যে অমুকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট,বলবে অমুক লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।একটা মৃত্যুই মুছে দেয় মানুষের গোত্র পরিচয় টাইটেল। সৃষ্টি করে নতুন নাম "লাশ"!আর এটাই আমাদের জীবনের চরম সত্য।
কল্পিত ডায়রী: লাশ
ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)
১৯-১০-২০১৭
Share:

Wednesday, October 10, 2018

শূন্যতেই শেষ- ইসমাইল হোসেন

জীবনের বাস্তবতা আসলেই খুব কঠিন।প্রতিনিয়ত কেটে যায় চাওয়া আর পাওয়ার ক্যালকুলেশনে। স্বল্প পরিসরের জীবনকে দীর্ঘতম করা মানুষের আজন্ম প্রয়াশ। কিছু ক্ষেত্রে মানুষ না চাইলেই পেয়ে যায়, কিন্তু চাওয়ার পাওয়াটা সবসময় সম্পূর্ণ হয়ে ওঠেনা। আর না পাওয়ার চেতনা মানুষকে নতুন করে চাইতে শেখায়। মনের গহিনে বুনতে শেখায় নতুন স্বপ্ন।

আমরা সবাই নিজেকে নিজের স্বপ্নের পৃথিবীতে রাজা ভাবি। অনেক ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলি স্বপ্ন কাব্য। স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে মানুষ মৃত্যু দুয়ারে এসেও ছোট্ট একটি অনুপ্রেরণা খুঁজে বাঁচার জন্য।

কিন্তু প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষ তার অনেক স্বপ্ন পূরনের খুব কাছাকাছি গিয়েও স্বপ্নগুলো পূরন করতে পারেনা। কেই কেউ স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট নিতে নিতে স্বপ্নহীন হয়ে একসময় মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। আবেগ অনুভূতি সব হারিয়ে হয়ে যায় পাগল প্রায়।
আমাদের সমাজে একে অন্যের দেখা স্বপ্নকে শ্রদ্ধা সম্মান করতে জানেনা।  স্বপ্ন পূরণের জন্য অনুপ্রেরণা তো দিতে পারেনা। বরং স্বপ্ন পূরণের বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

এভাবেই চলতে থাকে আমাদের জীবনের ভাঙা গড়ার লড়াই। তবে মাঝে মাঝে সময়গুলো খুব এলোমেলো ভাবে যেন পেছন ফিরে ডাকে। মনে করিয়ে দেয় পেলে আসা স্বপ্ন গুলির কথা। আর এটাই বাস্তবতা। কিন্তু স্বপ্ন দেখা মানুষ গুলি কঠিন বাস্তবতা সহজে মেনে নিতে পারেনা।স্বপ্নকে জয় করার লক্ষ বাদ দিয়ে লক্ষভ্রষ্ট হওয়া মানুষগুলো একসময় ব্যস্ত হয়ে যায় স্মৃতি হত্যার  লড়াইয়ে। সেটা হয়ে না হয়ে ওঠলেও জীবনের ক্যালকুলেশন টা একসময় ঠিকই মিলে শূন্যে পরিনত হয়।
Share:

Saturday, October 6, 2018

এটাই যে ভোর- ভাবুক

বালিশগুলো এখন দুপাশেই গরম।ভাবনা এখনও শেষ হয়নি,কানাকুয়োর ডাক আর দাঁড়কাকের কান্না ওখানে অনবরত।
সারারাত ঘুম হয়নি।
আসলে ঘুমাতে যাবার কথা ভাবতেই দেরি হয়ে গেছে।জেগে জেগে স্বপ্ন বুনেছিলাম।আস্তে আস্তে ফুটে উঠেছে কি অসহনীয় সাদা,অন্ধের গভীর সাদা।আরে এটা তো সূর্যের আলো।এটাই যে ভোর।


Share:

Wednesday, October 3, 2018

অথচ আমি- ভাবুক

আকাশের রং, বাতাসের গতিবেগ, সময় ও স্রোত যে যার মতো বদলে যায়।
সময়ের সাথে সাথে রং বদলায়।
নীল আকাশ দেখেছো?
কখনো কালো, কখনো সাদা,
আবার কখনো রংধনুর সাত রঙে মিশে যায়।
বাতাস কখনো পুবদিক থেকে, কখনো আবার উত্তর দক্ষিন থেকে বয়ে আসে।
সময় তো প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। বাড়িয়ে দিচ্ছে বয়স আর কমিয়ে নিচ্ছে আয়ু।

অথচ আমি এই অনিশ্চিত জীবনের ভাঙ্গা স্বপ্নগুলো নিয়ে এখনো স্থির হয়ে আছি ছোট্ট এক কবিতায়।
যেখানে বদলায় না জীবনের রং, শুধু মেঘে মেঘে ঢেকে যায়, শব্দহীন হয়ে যায় কবিতার লাইনগুলি।
আর আমি হারিয়ে যাই তোমাদের নগরী থেকে।

অথচ আমি
ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)
Share:

Wednesday, September 26, 2018

রঙিন স্বপ্ন- ভাবুক


জীবনটা খুব পানসে পানসে লাগে। কি আছে এই জীবনে? স্বল্প দৈর্ঘের সময়টায় সাজাই নানা লাল নীল স্বপ্ন।
কিছু স্বপ্ন আর লক্ষ্য নিয়েই আমাদের পথচলা।  যেখানে পরাজয়ের শঙ্কা প্রতিটা পদক্ষেপে।তবুও বেঁচে আছি, তা সৌভাগ্য নয় আর কি!
.
জোৎস্নাময় রাত, নীল আকাশে সাদা মেঘের তারা, হু হু করে বয়ে যাওয়া দখিনা বাতাস, আকাশ সমান পাহাড়, নদীর জলের কলকল ধ্বনি, রাতের নিস্তব্ধতা প্রতিটি মানুষকে বাঁচতে শেখায়। ইচ্ছে হয় যেন যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকি।
.
বছরের পর বছর ঘুরে শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত - আগে যেমন আসতো, এখনো তেমনি আসে, ভবিষ্যতেও আসবে। কিন্তু মানুষ আসে একবারই, যখন যায় চিরকালের জন্যই যায়; কেউ শুকনো পাতার মতো ঝরে বিলীন হয়ে যায়, কেউ রেখে যায় অবিনাশী স্মৃতি ।
.
জন্মগ্রহন মানেই প্রতিটি মানুষের পরকালের টিকিট হাতে নিয়ে পথের পথ ছুটা। সেটা বন্ধুদের সাথে খাবার কাড়াকাড়ি করে হোক বা কোনো অপিরিচিতা রহস্যময়ী সুন্দরী নারীর অপলক চাহনিতে।
দৈর্ঘের হিসেবে সময়টা স্বল্প হলেও আমাদের স্বপ্নগুলো গুলো স্বল্প নয়।
.
স্বপ্ন জয়ের প্রত্যাশা মানুষকে কাঁদায় ।দুঃখ-কষ্ট  জীবনের আরেক নির্যাস । দুঃখের মতো পরশ পাথর আর নেই । মেঘাচ্ছন্ন আকাশের আড়ালে তেজোদ্দীপ্ত সূর্যের মতো দুঃখের ওপারে থাকে অনাবিল সুখের হাতছানি । কে না জানে, যারা জীবনে অনেক দূঃখ-কষ্ট ভোগ করেছে তারাই সুখের প্রকৃত দাবিদার।
.
সুখ দুঃখের হিসেব মেলানো সম্ভব হয়না। সম্ভব হয়না সব স্বপ্নকে জয় করতে। মাঝে মাঝে জীবনটাকে নিরস মনে হয় । যেন পুরোটাই যান্ত্রিক আর একঘেয়ে।তবুও আমরা অপেক্ষায় থাকি কিছু অনাগত রঙধনুর। বুনি পাহাড় সমান স্বপ্ন।

© ইসমাইল হোসেন
Share:

Tuesday, September 4, 2018

জীবন ও চাওয়া- ভাবুক


বেঁচে থাকা‌ আর‌ চাই শব্দ একে অপরের সমানুপাতিক। চারিদিকে শুধু চাই আর চাই। যেন সীমাবদ্ধতা নেই। তবুও তো জানতে ইচ্ছে হয়, আমাদের ঠিক কতটা চাই? আর কতটা হলেই বা একজন মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস পেলে বলবে- থাক! আর না। যথেষ্ট পেয়েছিঙ! আসলে,মানুষের কাছে কিংবা মানুষের বিবেকের কাছে এ প্রশ্ন রাখা নিতান্তই অমূলক। মানুষের চাওয়ার শেষ নেই। মানুষ এখন একসাথে দুটি সিড়ি অতিক্রম করতে চায়। আর প্রতিটি সিড়ি অতিক্রম করতে শেখে অন্যকে ধোকা দেওয়া কিংবা প্রতারণা করার কৌশল।
Share:

Thursday, August 30, 2018

ভালোবাসারাও পালিয়ে যাবে- ভাবুক

অত:পর একদিন ভালোবাসারাও পালিয়ে যাবে,
ভালোবাসাহীন নগরে রাত্রি জেগে হবেনা আলাপ মুঠোফোনে।
রাস্তার মোড়ে কোনো যুবক দাড়িয়ে থাকবেনা সকালের সতেজ গোলাপ কিংবা রজনীগন্ধা হাতে। গাছের ছায়ায় কিংবা পার্কের বেঞ্চিতে পাওয়া যাবেনা কপোত কপোতি। সন্ধার পরেই জ্বলে উঠবে নিয়নবাতি। কিন্তু আলোকিত হবেনা কোনো প্রেম প্রিয়াসীর জুটি। দেখা যাবেনা যুগল অবস্থায় থাকা দুটি আস্থার হাত।
ভালোবাসার কথামালা ফুরিয়ে যাবে, চোখের ভাষায় অবাক হওয়ার চাহনিটা পাওয়া যাবেনা ।
সবকিছুই স্বাভাবিক হয়ে পড়বে।

আজ আমরা পার করছি তেমনই এক দু:সময়।
যেখানে অমূল্য ভালোবাসারা মিথ্যে ফেরি করে ফিরে - অচেনা সব অবয়ব, লোভাতুর দৃস্টি নিয়ে।
যেখানে ভালোবাসা বলতে কিছুই থাকেনা। থাকে শুধু নিজের স্বার্থটা।
যেখানে মিথ্যে ভালোবাসা গুলোর জয়গান হয়, আর সত্যিকারের ভালোবাসারা মূল্যহীন হয়ে বালিশ ভেজায়।
যেখানে ভালোবাসাকে প্রিয় মানুষের কষ্টে ছটপট করে নিদ্রাহীন রাত কাটাতে হয়।

তবুও আমরা ভাবি টিকে থাকুক আমাদের সবার ভালোবাসা। কিন্তু আসলেই কি ভালোবাসারা এতো কিছুর পর টিকে থাকে? নানা প্রতারনা আর বিশ্বাসঘাতকতার পর কি পাওয়া যায় ভালোবাসাদের? না, কখনই টিকে থাকেনা, পাওয়া যায় না ভালোবাসার অস্তিত্ব।

দেখবেন একদিন ভালোবাসারা পালিয়ে যাবে, হারিয়ে যাবে আমাদের নগরী থেকে। আরে ভালোবাসার দায় পড়েনি এ মূল্যবোধহীন সমাজে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে ।
অত:পর একদিন ভালোবাসারাও পালিয়ে যাবে! !

ভালোবাসারাও পালিয়ে যাবে ।
~ইসমাইল হোসেন ভাবুক

Share:

বিশ্বাস- ভাবুক

বিশ্বাস জিনিসটা খুবই দামি। একটা বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে কয়েকটা মানুষের জীবন।পৃথিবীতে প্রতি মূহুর্তে সহস্র বিশ্বাস ভাঙ্গার কর্কট শব্দে দ্বি খন্ডিত হচ্ছে অগনিত মানুষের হৃদয়। এরপরেও পৃথিবীটা এখনও বিশ্বাসের উপর স্থীর। কেউ একজন বিশ্বাস ভাঙ্গবে জেনেও আমরা বিশ্বাসের তীরটা তার দিকে ছুঁড়ে মারি। আর লক্ষ্য একটাই, আমার তীরটা কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে না।

Share:

Tuesday, July 31, 2018

আমার অজানা গন্তব্য- ভাবুক

হেঁটে যাই নির্জন গ্রামের সরু পথ ধরে। শেষ বিকেলের পড়ন্ত রোধের আলো গাছের পাতার ফাঁকে যেন আলতো ছুঁয়ে যায়। গাছের শুকনো পাতাগুলোর পায়ের তলায় পড়ে মরমর শব্দটা আমাকে ভাবিয়ে তোলে। গাছে ছোট্ট ছোট্ট ঢালপালা গুলো যেন আমায় অভ্যর্থনা দেয়। যেন জিগ্যেস করে-
"হে পথিক! যাত্রা তোমার কতদিনের?"
 
উত্তর দিতে বড় ইচ্ছে হয়। কিন্তু উত্তরটা আমার জানা নয়। সৃষ্টা নিজ হাতে উত্তরটা রেখে দিয়েছে। তাই মাথা নিছু করে হেঁটে যাই।  পথে দেখা হয় কত কৃষক, শ্রমিক,দিনমুজুর আর নামীদামি ব্যাক্তিদের সাথে । তারাও নাকি আমার মতো কয়েকদিনের পথিক! আস্তে আস্তে সুর্যের আলো লাল হয়ে হারিয়ে যায় । রাতের আধার ঘনিয়ে আসে। কিন্তু আমার পদারচনা শেষ হয়না। রাত-দিন, সকাল -বিকেল চলতেই‌ থাকে‌। হাটছি তো হাটছিই। মন চাইলে পিছনে ফিরে দেখি কি হয়েছিলো অতিতে। হাসি কান্না, সুখ দুঃখের মাঝেও থামেনা আমার এই ভ্রমন।

আমি হেঁটে যাই, চলে‌ যায়,‌ছুটে যাই আমার অজানা গন্তব্যে,,,,,।

~ আমার অজানা গন্তব্য
© ইসমাইল হোসেন

Share:

Saturday, June 9, 2018

নট ফর সেল (১)- ভাবুক

দেহ বহুকাল আগে থেকে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়ে আসছে। আমাদের সমাজে দেহ ব্যবসায়ীদের চাহিদাও ব্যাপক। রাত হলেই বিভিন্ন বেশ্যা গলি বা পতিতালয়ে দেখা যায় ক্রেতা বিক্রেতার ভীড়।তাছাড়াও এখন আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা সবই বিক্রি হয়। সবার আকর্ষন এখন সুন্দর কাগজে মোড়ানো পণ্যের প্রতি। পন্যের গুনাগুন দেখা মুখ্য বিষয় নয়। পঁচা পন্যে যদি কিছুটা সুগন্ধি ছিটিয়ে সুন্দর থেকে ডিব্বায় ভরে রাখা হয়, তখন এর ক্রেতার অভাব হয়না। কেননা আমাদের মস্তিষ্কে পঁচন ধরেছে। ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা আমাদের নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা যেদিন থেকে আধুনিক হচ্ছি, সেদিন থেকেই বিকৃত মস্তিষ্ক নিয়ে বড় হচ্ছি।  তা নাহলে কি পশ্চিমা বিশ্বের নগ্নতায় ভরপুর থাকা পোশাক গুলোকে কেন আধুনিক পোশাক বলা হয়?  কেন  প্রতিনিয়ত দেশে ধর্ষনের মতো জগন্য কর্মকান্ড ঘটে? আধুনিকতা প্রকাশ করতে আমাদের মিডিয়া জগত এতোই নোংরা হচ্ছে যে একটা মুভি দূরে থাক, বিজ্ঞাপন গুলোও পরিবারের সবাই মিলে দেখতে দ্বিধাবোধ করি। এসবের মূলে রয়েছে আমাদের চরিত্রটা। কখন যে নিজের চরিত্রটাকে বিসর্জন দেয় তা আমরা নিজেও টের পাইনা। একটা মানুষের সব গুনাবলি বিবেচনা করা হয় চরিত্র দিয়ে। আর এটাকেই আমরা কিছু আবেগ অনুভূতির বিনিময়ে বিক্রি করে ফেলি। চরিত্রের মূল্য আবেগ অনুভূতির মতো এতো স্বল্প নয়।এটার বিস্তরতা হিসেব করলে সমগ্র আকাশ ছাড়িয়ে যাবে। যদি বলেন উচ্চতা, তাহলে সুউচ্চ পাহাড়ও চরিত্রের মূল্য নির্ধারন করতে পারবেনা। আমার আপনার আধুনিকতা তখনই সমাজকে সুন্দর করবে, যখন এই বিশাল মূল্যের চরিত্রের গায়ে সিলগালা দিয়ে তালা লাগিয়ে বলতে পারবেন "Sorry! NOT FOR SALE!"

~নট ফর সেল (১)
~ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)

Share:

Thursday, June 7, 2018

আমার কবে ছুটি হবে- ভাবুক

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হচ্ছে।  বসে আছি গায়ের মাথার এক দীঘির পাড়ে। সূর্যের রক্তিম আলো এসে গায়ে পড়তেছে।চারিদিকটা কেমন নিস্তব্ধ। পাশের রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষন পর পর কৃষকেরা বাড়ি যাচ্ছে। শুধু দীঘির পাড়ের গাছগাছালির উপর বসা পাখিগুলোরই কিছিরমিছির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এইতো কিছুদিন আগে  সফিক চাচার জমিতে কত খেলেছি।ক্রিকেট ফুটবল কাবাডি আর গোল্লাছুট। সেই সব বন্ধুগুলা আজ কোথায় আছে ঠিক নেই।  কেউ পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত, কেউ আবার অভাব অনটনে পড়াশুনা বাদ দিয়ে কর্ম জীবনে পা রেখেছে। আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সবাই মোটামুটি প্রকৃতি থেকে দূরে। যেসময় সফিক চাচার জমিতে চার,ছয় আর উইকেট নিয়ে চিৎকার আনন্দ হতো, এখন সেসব কিছু মোবাইলের WCC2, Real Cricket, বা PC এর Ashes Cricket এ আবদ্ধ। এখন আর মাঠে গোল উল্লাস হয়না। সেটাও হারিয়ে‌ গেছে Dream League Soccer, Pes 18, বা Real Football নামক গেমস এর মাঝে। বন্ধু গুলো যেন প্রকৃতি থেকে ছুটি নিয়ে নিয়েছে।  মানুষগুলোও খুব অদ্ভুত হয়েগেছে। সবসময় সবার মাঝে দুঃখ বিরাজ করে। থাকে না পাওয়ার আর্তনাদ। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়, সবার দুঃখগুলো যদি আধুনিকতার ছোঁয়ার ShareIT বা Bluethoot দিয়ে নিজের করে নিই,দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্ত করি সবাইকে। কিন্তু পারিনা, সেই অক্ষমতা সবসময় আমাকে কুড়েকুড়ে খায়। আমি আর পারছিনা এই অদ্ভুদ জগতে থাকতে। আত্নহত্যা যদি মহাপাপ না হতো, সেই কবেল বিদায় নিতাম।
দূরে সন্ধ্যার ট্রেন ঝকঝক করে যাচ্ছে গঞ্জের দিকে। গোধুলীর আলো আমার গায়ে এসে লেপ্টে পড়ছে। তারই মধ্যে শুনা গেলি মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি। দীঘির পাড় থেকে উঠে হাটা ধরলাম মসজিদের দিকে, আর মনেমনে ভাবতে লাগলাম "আমার কবে ছুটি হবে?"

~আমার কবে ছুটি হবে?

ফেসবুকে আমি:
ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)
সামু ব্লগে:
স্বচ্ছ দর্পন 
০১-০৫-২০১৮

Share:

Tuesday, June 5, 2018

পথের পথিক-ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)

পিচঢালা পথে আমি হেটেছি
অজানা পথের পথিক বেশে,
বিষন্ন পায়ে পিচগলা রোদে
বেশ ক্লান্ত হয়েছি শেষে।
দেখেছি ব্যাস্ত মানুষের
অযথা নিদারুন ছোটাছুটি,
পাতা কুড়ানির মেয়েটার হাতে
দুদিনের বাসি একটি রুটি।
দেখেছি নতুন নতুন স্বপ্ন
ফেরিওয়ালার অক্লান্ত পরিশ্রমে,
দেখেছি বুক ভরা উচ্ছাস
কচুরিপানার হালকা নীল রঙে।
স্কুল-পালানো ছেলেটার হাতে
দেখেছি আকাশী রঙের ঘুড়ি,
হাড় কাঁপানো শীতে থরথরে কাঁপা
ষাট বছরের দরিদ্র বুড়ি।
দেখেছি রাস্তায় থেঁতলে পড়ে থাকা
বেওয়ারিশ মানুষের আর্তনাদ,
দেখেছি প্রতিটি দিনমজুরের
একেকেটি নির্ঘুম দুর্বিষহ রাত।
শুনেছি প্রিয়জন হারানো মানুষ গুলোর
কষ্ট মাখা কন্ঠের আত্ম চিৎকার,
দেখেছি শোষক শ্রেণীর প্রতি
শোষিত মানুষের নিরব ধিক্কার।
দেখেছি বৃদ্ধাশ্রমে মা-বাবার
কুলাঙ্গার সন্তানের জন্য কান্না,
শুনেছি বিধাতার কাছে মিনতি-
"নিয়ে যাও খোদা,আর বাঁচতে চাইনা।"
দেখতে দেখতে ক্লান্ত আমি
রেখে যাচ্ছি আমার পদচিহ্ন,
এই পথিকের পথে আসবেনা কেউ,
সবার পথটাই যেন ভিন্ন ভিন্ন।
,
পথের পথিক
সমাইল হোসেন (ভাবুক)
সামু ব্লগে: স্বচ্ছ দর্পন
০৮-১২-২০১৭
,
ব্যাখ্যা: জীবন একটি পথ আর আমরা সেই পথের পথিক। এই পথটা সবার জন্যই ভিন্ন।জীবন পথে পাড়ি দিতে অনেক কিছুই আমরা দেখতে পাই। পরিচয় হয় অনেক মানুষের সাথে, পরিবেশের সাথে।একসময় সব পদচিহ্ন রেখে আমরা ক্লান্ত হয়ে পথটা শেষ করি।

Share:

Latest Posts

Search This Blog

Contact Form

Name

Email *

Message *

Followers