Saturday, June 9, 2018

নট ফর সেল (১)- ভাবুক

দেহ বহুকাল আগে থেকে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়ে আসছে। আমাদের সমাজে দেহ ব্যবসায়ীদের চাহিদাও ব্যাপক। রাত হলেই বিভিন্ন বেশ্যা গলি বা পতিতালয়ে দেখা যায় ক্রেতা বিক্রেতার ভীড়।তাছাড়াও এখন আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা সবই বিক্রি হয়। সবার আকর্ষন এখন সুন্দর কাগজে মোড়ানো পণ্যের প্রতি। পন্যের গুনাগুন দেখা মুখ্য বিষয় নয়। পঁচা পন্যে যদি কিছুটা সুগন্ধি ছিটিয়ে সুন্দর থেকে ডিব্বায় ভরে রাখা হয়, তখন এর ক্রেতার অভাব হয়না। কেননা আমাদের মস্তিষ্কে পঁচন ধরেছে। ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা আমাদের নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা যেদিন থেকে আধুনিক হচ্ছি, সেদিন থেকেই বিকৃত মস্তিষ্ক নিয়ে বড় হচ্ছি।  তা নাহলে কি পশ্চিমা বিশ্বের নগ্নতায় ভরপুর থাকা পোশাক গুলোকে কেন আধুনিক পোশাক বলা হয়?  কেন  প্রতিনিয়ত দেশে ধর্ষনের মতো জগন্য কর্মকান্ড ঘটে? আধুনিকতা প্রকাশ করতে আমাদের মিডিয়া জগত এতোই নোংরা হচ্ছে যে একটা মুভি দূরে থাক, বিজ্ঞাপন গুলোও পরিবারের সবাই মিলে দেখতে দ্বিধাবোধ করি। এসবের মূলে রয়েছে আমাদের চরিত্রটা। কখন যে নিজের চরিত্রটাকে বিসর্জন দেয় তা আমরা নিজেও টের পাইনা। একটা মানুষের সব গুনাবলি বিবেচনা করা হয় চরিত্র দিয়ে। আর এটাকেই আমরা কিছু আবেগ অনুভূতির বিনিময়ে বিক্রি করে ফেলি। চরিত্রের মূল্য আবেগ অনুভূতির মতো এতো স্বল্প নয়।এটার বিস্তরতা হিসেব করলে সমগ্র আকাশ ছাড়িয়ে যাবে। যদি বলেন উচ্চতা, তাহলে সুউচ্চ পাহাড়ও চরিত্রের মূল্য নির্ধারন করতে পারবেনা। আমার আপনার আধুনিকতা তখনই সমাজকে সুন্দর করবে, যখন এই বিশাল মূল্যের চরিত্রের গায়ে সিলগালা দিয়ে তালা লাগিয়ে বলতে পারবেন "Sorry! NOT FOR SALE!"

~নট ফর সেল (১)
~ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)

Share:

Thursday, June 7, 2018

আমার কবে ছুটি হবে- ভাবুক

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হচ্ছে।  বসে আছি গায়ের মাথার এক দীঘির পাড়ে। সূর্যের রক্তিম আলো এসে গায়ে পড়তেছে।চারিদিকটা কেমন নিস্তব্ধ। পাশের রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষন পর পর কৃষকেরা বাড়ি যাচ্ছে। শুধু দীঘির পাড়ের গাছগাছালির উপর বসা পাখিগুলোরই কিছিরমিছির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এইতো কিছুদিন আগে  সফিক চাচার জমিতে কত খেলেছি।ক্রিকেট ফুটবল কাবাডি আর গোল্লাছুট। সেই সব বন্ধুগুলা আজ কোথায় আছে ঠিক নেই।  কেউ পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত, কেউ আবার অভাব অনটনে পড়াশুনা বাদ দিয়ে কর্ম জীবনে পা রেখেছে। আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সবাই মোটামুটি প্রকৃতি থেকে দূরে। যেসময় সফিক চাচার জমিতে চার,ছয় আর উইকেট নিয়ে চিৎকার আনন্দ হতো, এখন সেসব কিছু মোবাইলের WCC2, Real Cricket, বা PC এর Ashes Cricket এ আবদ্ধ। এখন আর মাঠে গোল উল্লাস হয়না। সেটাও হারিয়ে‌ গেছে Dream League Soccer, Pes 18, বা Real Football নামক গেমস এর মাঝে। বন্ধু গুলো যেন প্রকৃতি থেকে ছুটি নিয়ে নিয়েছে।  মানুষগুলোও খুব অদ্ভুত হয়েগেছে। সবসময় সবার মাঝে দুঃখ বিরাজ করে। থাকে না পাওয়ার আর্তনাদ। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়, সবার দুঃখগুলো যদি আধুনিকতার ছোঁয়ার ShareIT বা Bluethoot দিয়ে নিজের করে নিই,দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্ত করি সবাইকে। কিন্তু পারিনা, সেই অক্ষমতা সবসময় আমাকে কুড়েকুড়ে খায়। আমি আর পারছিনা এই অদ্ভুদ জগতে থাকতে। আত্নহত্যা যদি মহাপাপ না হতো, সেই কবেল বিদায় নিতাম।
দূরে সন্ধ্যার ট্রেন ঝকঝক করে যাচ্ছে গঞ্জের দিকে। গোধুলীর আলো আমার গায়ে এসে লেপ্টে পড়ছে। তারই মধ্যে শুনা গেলি মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি। দীঘির পাড় থেকে উঠে হাটা ধরলাম মসজিদের দিকে, আর মনেমনে ভাবতে লাগলাম "আমার কবে ছুটি হবে?"

~আমার কবে ছুটি হবে?

ফেসবুকে আমি:
ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)
সামু ব্লগে:
স্বচ্ছ দর্পন 
০১-০৫-২০১৮

Share:

Tuesday, June 5, 2018

পথের পথিক-ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)

পিচঢালা পথে আমি হেটেছি
অজানা পথের পথিক বেশে,
বিষন্ন পায়ে পিচগলা রোদে
বেশ ক্লান্ত হয়েছি শেষে।
দেখেছি ব্যাস্ত মানুষের
অযথা নিদারুন ছোটাছুটি,
পাতা কুড়ানির মেয়েটার হাতে
দুদিনের বাসি একটি রুটি।
দেখেছি নতুন নতুন স্বপ্ন
ফেরিওয়ালার অক্লান্ত পরিশ্রমে,
দেখেছি বুক ভরা উচ্ছাস
কচুরিপানার হালকা নীল রঙে।
স্কুল-পালানো ছেলেটার হাতে
দেখেছি আকাশী রঙের ঘুড়ি,
হাড় কাঁপানো শীতে থরথরে কাঁপা
ষাট বছরের দরিদ্র বুড়ি।
দেখেছি রাস্তায় থেঁতলে পড়ে থাকা
বেওয়ারিশ মানুষের আর্তনাদ,
দেখেছি প্রতিটি দিনমজুরের
একেকেটি নির্ঘুম দুর্বিষহ রাত।
শুনেছি প্রিয়জন হারানো মানুষ গুলোর
কষ্ট মাখা কন্ঠের আত্ম চিৎকার,
দেখেছি শোষক শ্রেণীর প্রতি
শোষিত মানুষের নিরব ধিক্কার।
দেখেছি বৃদ্ধাশ্রমে মা-বাবার
কুলাঙ্গার সন্তানের জন্য কান্না,
শুনেছি বিধাতার কাছে মিনতি-
"নিয়ে যাও খোদা,আর বাঁচতে চাইনা।"
দেখতে দেখতে ক্লান্ত আমি
রেখে যাচ্ছি আমার পদচিহ্ন,
এই পথিকের পথে আসবেনা কেউ,
সবার পথটাই যেন ভিন্ন ভিন্ন।
,
পথের পথিক
সমাইল হোসেন (ভাবুক)
সামু ব্লগে: স্বচ্ছ দর্পন
০৮-১২-২০১৭
,
ব্যাখ্যা: জীবন একটি পথ আর আমরা সেই পথের পথিক। এই পথটা সবার জন্যই ভিন্ন।জীবন পথে পাড়ি দিতে অনেক কিছুই আমরা দেখতে পাই। পরিচয় হয় অনেক মানুষের সাথে, পরিবেশের সাথে।একসময় সব পদচিহ্ন রেখে আমরা ক্লান্ত হয়ে পথটা শেষ করি।

Share:

Latest Posts

Search This Blog

Contact Form

Name

Email *

Message *

Followers